অপর্যাপ্ত খাদ্য, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ঘাম, শরীরচর্চা, অথবা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে সাধারণত শরীরের রাসায়নিক উপাদান সমূহের ভারসাম্যহীনতার কারণে শরীরে বাজে গন্ধ হয়। ব্যাকটেরিয়া শরীরে বাজে দুর্গন্ধের জন্য একটি বড় ভূমিকা পালন করে। কিছু কিছু শরীরের অঙ্গ, যেমন, মুখ, বগল, কুঁচকি, মুত্রথলি বা পা সব সময়েই যেন বাজে গন্ধ তৈরি হওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। শরীরের যে সব এলাকাতে আমরা বেশী ঘামি বিশেষত সেখানে বাজে গন্ধের জন্য দায়ী ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুরা একযোগে আক্রমণ চালায়। ব্যাকটেরিয়া কেবল মাত্র অম্লীয় পরিবেশে জন্মাতে পারে। যখন এমনটি ঘটে তখন আমাদের শরীর থেকে লবন এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ ঘামের মাধ্যমে নিঃসরিত হয়, এতে করে আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য ভালভাবে বজায় থাকতে সহায়ক হয়।
বেশীর ভাগ সময়ে যে কারণে শরীরে এ ধরণের রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা ঘটে থাকে তা হল অপর্যাপ্ত ও পুষ্টিহীন খাদ্য গ্রহণ এবং কিছু নির্দিষ্ট বিষাক্ত দ্রব্য এবং খাদ্য গ্রহণ যা আমাদের শরীরের এসিডিটি লেভেল পুনর্বিন্যাস করে দেয়। · ক্লোরোফিল (chlorophyll) এর মানব দেহে অনেক ধরণের উপকারী ভূমিকা আছে। এটি আঁশ সমৃদ্ধ খাবার হজমে সহায়তা করে, বিষ মুক্ত করে, শরীরের সার্বিক উন্নতি করে, কোষের রোগ প্রতিরোধ এবং বিভাজন ক্ষমতা বাড়ায়, আরোগ্য লাভের সক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের বাজে গন্ধের জন্য সবচেয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ সেই এসিড ভিত্তিক বিক্রিয়ার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে। · বেশী পরিমাণে মিষ্টি জাতীয় খাদ্য এবং পরিশোধিত চিনি গ্রহণ পরিহার করুন যা এসিডের ভারসাম্য পুনর্বিন্যাস করে এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বাড়ায়। লাল বর্ণের মাংস আমাদের পাকস্থলীতে প্রক্রিয়াজাত হতে এবং হজম হতে অনেক বেশী সময় নেয়। পেঁয়াজ এবং রসুনের মত উদ্ভিদের আমাদের নিঃশ্বাসকে দুর্গন্ধযুক্ত করার ক্ষমতা আছে কারণ এতে অনেক বেশী পরিমাণে সালফার থাকে যা বাজে গন্ধের জন্য দায়ী। কফি এবং অ্যালকোহলের শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির দ্বিমুখী কার্যকারিতা আছে এবং দুধজাত খাদ্য যাতে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকে তা ব্যাকটেরিয়াকে হাইড্রজেন সালফারে পরিনত করতে পারে। · আপেল সিডার ভিনেগার যখন ডিওডারেন্ট এর বদলে বগলের নীচে ব্যবহার করা হয় তখন এটি বাজে গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে কারণ এটি চামড়ার pH (অম্লতা মাপার একক) মান কমিয়ে দেয়। ব্যাকটেরিয়া নিম্ন pH মান সম্বলিত অংশে জন্মাতে পারে না। আপনার বগল বা পায়ে তুলাতে অল্প একটু ভিনেগার নিয়ে মেখে নিয়ে পরের দিন সকালে ধুয়ে ফেলতে পারেন। · গন্ধ কমানোর জন্য পা এবং বগল বেকিং সোডা দিয়ে পরিস্কার করুন। বগলের নীচে শুধু বেকিং সোডা পাউডার মেখে নিন, এটি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করবে এবং ঘাম শুষে নিতে সাহায্য করবে। অল্প একটু বেকিং সোডা জুতাতে দিয়ে গন্ধ কমাতে পারেন এবং মুখের গন্ধ দূর করতে মুখে নিয়ে কুলি করতে পারেন। · রোজমেরি (Rosemary) এর জীবাণু নাশক কার্যকারিতার কারণে শরীরের বাজে গন্ধ দূর করার জন্য বেশ সুপরিচিত। এই ভেষজটির মনোমুগ্ধকর সুগন্ধ আপনার পাকস্থলিকে স্বস্তি দান করতে ব্যবহার করা যায়। আপনার খাদ্য তালিকার চা তে এটি মিশিয়ে গ্রহণ করলে পৌষ্টিক নালীর বেশ উপকার হয় এবং এর জীবাণু নাশক বৈশিষ্ট্যের কারণে চামড়ার উপরের অপ্রত্যাশিত ক্ষুদ্র জৈব জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এক আউন্স পরিমাণ পানিতে ৮-১০ ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে প্রয়োগ করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন