ভুলে যাওয়া রোধ ও মস্তিষ্কের শক্তি ধরে রাখার ৯টি অব্যর্থ উপায়
আমাদের এ মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ধরে রাখা ও একে বাড়িয়ে তোলার নানা উপায় নিয়ে বিজ্ঞানীরাও নানা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব গবেষণায় উঠে এসেছে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর কিছু অব্যর্থ উপায়। এ ছাড়া দেখা যায়, বয়স হলে অনেকেরই স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে। এসব সমস্যা কমানো যায় মস্তিষ্কের নানা অনুশীলন, চর্চা ও সঠিক খাবারের মাধ্যমে। এসব উপায় নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হাফিংটন পোস্ট।
১. শিখতে থাকুন
বহু গবেষণাতেই দেখা গেছে, শিক্ষা মানসিক কার্যক্ষমতা ধরে রাখে। এ তত্ত্ব অনুযায়ী মানুষ যত বেশি শিক্ষিত তার মানসিকতাও তত সমৃদ্ধ। আর এর ফলে মস্তিষ্কের অবসাদ আসতে তাদের মস্তিষ্ক তত বেশি বাধা দেয়। দেখা গেছে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বিনাশী রোগ অ্যালঝেইমার্স উচ্চশিক্ষিত মানুষের মাঝে দেরিতে আক্রমণ করে। এ কারণে দেখা যায়, শিক্ষা যত বেশি হবে তত বেশি আপনার মস্তিষ্ক কার্যক্ষম থাকবে।
১. শিখতে থাকুন
বহু গবেষণাতেই দেখা গেছে, শিক্ষা মানসিক কার্যক্ষমতা ধরে রাখে। এ তত্ত্ব অনুযায়ী মানুষ যত বেশি শিক্ষিত তার মানসিকতাও তত সমৃদ্ধ। আর এর ফলে মস্তিষ্কের অবসাদ আসতে তাদের মস্তিষ্ক তত বেশি বাধা দেয়। দেখা গেছে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বিনাশী রোগ অ্যালঝেইমার্স উচ্চশিক্ষিত মানুষের মাঝে দেরিতে আক্রমণ করে। এ কারণে দেখা যায়, শিক্ষা যত বেশি হবে তত বেশি আপনার মস্তিষ্ক কার্যক্ষম থাকবে।
২. ক্রসওয়ার্ড করুন
আপনি যদি স্কুলে আবার ফিরতে না চান, তাহলেও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা টিকিয়ে রাখার উপায় আছে। এ জন্য আপনাকে নিয়মিত ক্রসওয়ার্ডের সমাধান করতে হবে। তরুণ বয়সে আপনার শিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বয়স হলে ক্রসওয়ার্ড হতে পারে আপনার জন্য উপযুক্ত সমাধান। এক গবেষণায় দেখা গেছে এ ধরনের ক্রসওয়ার্ড নিয়ে একটি দিন ব্যস্ত থাকলে সে কারণে দুই মাস পিছিয়ে যায় মস্তিষ্কের রোগ ডিম্যানশিয়া।
৩. নেতিবাচকতা বাদ দেওয়া
মন থেকে নেতিবাচকতা ত্যাগ করা হতে পারে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ধরে রাখার অন্যতম উপায়। যখন কোনো একটি বিষয়ে মস্তিষ্ক উদ্বিগ্ন থাকে তখন মস্তিষ্ক তা গ্রহণ করে এবং সেভাবে প্রস্তুত হয়। এ কারণে নেতিবাচক চিন্তাগুলো মস্তিষ্কে স্থায়ী হয়ে যায়। ফলে মধ্যবয়সে হতে হয় স্মৃতিভ্রংশের শিকার। অন্যদিকে ইতিবাচক ও গঠনমূলক বিষয় নিয়ে চিন্তা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৪. নিজের ইন্দ্রীয়গুলো ব্যবহার করুন
মানুষের মস্তিষ্ক বিভিন্ন ইন্দ্রীয় থেকে গ্রহণকৃত তথ্য মনে রাখে। খুব ছোট আকারে হলেও কোনোকিছু দেখা, শোনা বা স্পর্শজনিত নানা তথ্য মনে রাখতে খুবই কার্যকর মানুষের মস্তিষ্ক। যেমন কোনো একটি ফুলের ছবির পাশাপাশি যদি তার গন্ধটাও গ্রহণ করা যায় তাহলে সে বিষয়টি মনে রাখতে খুবই সুবিধা হয়।
৫. সামাজিকতা
সামাজিকতা ও ভালো স্মৃতিশক্তির একটি পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ ভালো স্মৃতিশক্তিধারীরা বেশি সামাজিক হয়। তবে এতে কোনটির অবদান বেশি তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। তবে ২০০৮ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, যেসব অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি সামাজিকতায় তেমন অংশ নেন না, তাদের মস্তিষ্ক সামাজিকদের তুলনায় দ্বিগুণ হারে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। গবেষকরা জানাচ্ছেন, সামাজিকতা আমাদের মস্তিষ্কের উপকার করে। সামাজিকতার ফলে নিজের দিকে নজর দেওয়া, চাপ কমানো ও নিউরো হরমোন নিঃস্বরণে সহায়তা করে।
৬. একসঙ্গে অনেক কাজ (মাল্টিটাস্ক) বাদ দিন
আমরা অনেকেই একসঙ্গে অনেক কাজ (বা মাল্টিটাস্ক) করে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে মাল্টিটাস্ক বাস্তবে মানুষকে ধীর করে দেয়। এতে মনোযোগ বিক্ষিপ্ততা তৈরি হয়, যা সৃষ্টিশীলতার তুলনায় সমস্যাই বেশি তৈরি করে।
৭. স্পেসড ইন্টারভাল রিপিটিশন
আপনার যদি কোনোকিছু মনে রাখার প্রয়োজন হয় তাহলে এ পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। স্পেসড ইন্টারভাল রিপিটিশন (এসআইআর) নামে এ পদ্ধতিতে কোনো একটি বিষয় নির্দিষ্ট বিরতিতে অনুশীলন করা হয়। কোনো একটি বিষয় প্রাথমিকভাবে অনেক ধীরে ধীরে অনুশীলন করলেও পরে তা খুব দ্রুতগতিতে করা হয়। এ বিষয়ে বহু স্মার্টফোন অ্যাপও পাওয়া যায়।
৮. শারীরিক অনুশীলন করুন
মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী কার্যকারিতার জন্য শারীরিক অনুশীলন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্ক ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আর এ পর্যায়কে বিলম্বিত করে শারীরিক অনুশীলন। শারীরিক অনুশীলনের ফলে মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায় এবং নার্ভ সেল উৎপাদন বজায় রাখে। এমনকি ছয় মিনিটের শারীরিক অনুশীলনও মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৯. সঠিক খাবার
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার সঙ্গে সঠিক খাবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ইঁদুরের ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি চিনিসমৃদ্ধ খাবার দিলে তাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এ ছাড়া ওজন বাড়লেও মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা হয়। অন্যদিকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার যেমন স্যামন মাছ, আখরোট ও সয়াবিনসমৃদ্ধ খাবার মস্তিষ্কের অবনমন রোধ করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন