ত্যাগ
আপনাদের কি ইবোলা ভাইরাসের কথা মনে আছে ?
সেই ইবোলা ভাইরাস নিয়ে আমার হৃদয় ছোয়া একটা গল্প । বেশি কিছু না বলে মূল গল্পে আসি,
প্রথম অংশ
মজু মিয়া মিঞা বাড়ির বড় ছেলে । তার বড় ছেলেটা ঢাকার একটা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে । বড় ছেলেকে নিয়ে তার স্বপ্নটা ও অনেক বড় । আর ছোট ছেলেটার পড়া লেখায় তেমন মন নেই । ঠিক মতো স্কুলে যাওয়া তো হয়না তার উপর সঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পাড়ার বাজারের চায়ের দোকানে সারাক্ষন হইহুল্লাহ । তাইতো কেউ কেউ ছেলের কর্মের জন্য মজিদ মিয়ার কাছে হালকা নালিশ করে , ছেলেটাকে কি শাষন করোনা ? ওতো ভারী বেয়াদব হইতাছে ।
মজু মিয়া তখন দাঁতের উপর দাঁত চেপে রাগে বিড় বিড় করে । আর ভাবে আমি আর কত বা করবো কাজের কথা বললে কাজে ও আসেনা । পড়া লেখাও ঠিক মতো করে না , যদি নাই শুনে আমার আর কি ? চেষ্টাতো আমি করতাছি , বড় ছেলেটার চিন্তা করি না । এইতো আর একটা বছর ছেলেটার এম বি এ টা শেষ হলে উপরে ওয়ালার রহমতে একটা চাকুরী হয়ে গেলে ওর পথটা তো ও করে নিবে আমি আর একটা বছর কষ্ট করে টাকা পয়সা যোগান দিতে পারলে হয় ।
আশ্বিনের দুপুরে ঘাম জড়ানো শরীরে এগুলো ভাবে আর সবজির ক্ষেত পরিচর্যা করে মজু মিয়া ।
আজ রোদ পড়ছে বেশ , তাই মজু মিয়ার ভালোই পানির পিপাসা পেয়েছে । পানি পান করতে হলে ঐ যে বড় রাস্তার পাশের একটি বাড়িতে যেতে হবে । এ দিকে দুপুর গড়িয়েছে ক্ষেতের কাজ ও একটু বাকি , তাই মজু মিয়া চিন্তা করতাছে কাজটুকু শেরে একবারে চলে যাই । এরকম টা ভেবেই আবার ক্ষেতের কাজে মনোযোগ দেয় মজু । এমন সময় মজু মিয়া শুনতে পায় ,
মজু মিয়া ও মজু মিয়া , দুপুরের খানা দানার কথা কি মনে নাই ? নাকি কাজ করতে করতে ভুলেই গেছো । আরে ও মিয়া এ দিকে আসো একটু গাছ তলায় বসে জিরাই নাও ।
মজু মিয়া সারা দিয়া বলে কে গনি ভাই, বহ আইতাছি ।
মজু মিয়া সারা দিয়া বলে কে গনি ভাই, বহ আইতাছি ।
গনি মিয়া মজু মিয়ার পাশের ক্ষেতের মালিক অতপর মজু মিয়া গামছাটা খুলে মুখের ঘাম মুছতে মুছতে এসে গনি মিয়ার সাথে গাছ তলাই বসে । গনি মিয়া একটা বিড়ি বের করে মজু মিয়াকে বলে,
ধরো বিড়িটা লাগাও, এত কাজ করে কি হবে? কাজ তো সারা জীবনও করলা ! মজু মিয়া বিড়িতে আগুন ধরাইয়া টানতে লাগলো । গনি মিয়া বলে তাতো মিয়া বড় ছেলেকে তো বহুত পড়ালেহা শিখাইতাছো,
হ' ভাই আপনাগো দোয়া । ভাই ,দোয়া করবেন আমার পোলাডা যেন মানুষ হইতে পারে ।
ধুর মিয়া কি যে কও ? তোমার পোলা তো আমাগো পোলা। দোয়া করি তোমার পোলা মানুষের মতো মানুষ হউক ।
তো মজু মিয়া , তোমার তো সুদিন আইতাছে তোমার আর কি চিন্তা ?
চিন্তা তো আছে গনি ভাই ।
সেটা আবার কি চিন্তা ? মজু মিয়া ।
ভাই এই চিন্তাটা আমার ছোট ছেলে মমিন মিয়াকে নিয়ে,
হের আবার কি হইছে ?
কি আর হইবো পড়া লেখায় এক দম মন নাই তার উপর সারাদিন বখাটে ছেলেদের সাথে চলা পেরা, আমার কথা একদম হুনে না । সারাক্ষন আমার আড়ালে আড়ালে চলাফেরা করে , আমি যে এখন কি করি গনি ভাই ,এই চিন্তাটা সারাক্ষন মাথায় ঘুরা ঘুরি করে ।
তো মজু মিয়া তোমার মমিন মিয়ার বয়স কত অহনে ?
তা আর কত হইব ১৭-১৮ হইব আর কি ।