৬২ কোম্পানির ওষুধ
থেকে সাবধান
গাজী শাহনেওয়াজ
নিষিদ্ধ ও কালোতালিকাভুক্ত ৬২ কোম্পানির ওষুধ কেনা থেকে সাবধান। এসব কোম্পানি মরণব্যাধি ওষুধ উৎপাদন করে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে বাজারজাত করছে। সংসদীয় কমিটি নূ্যনতম ব্যবহারে অযোগ্য এগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিলেও অধিদপ্তর স্ব-প্রণোদিত হয়ে পাল্টা কমিটি করে ১৫ কোম্পানিকে ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি দেয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটি। কমিটি বলেছে, সুপারিশের পর মন্ত্রণালয়ের আবার কমিটি গঠনের যৌক্তিকতা নেই। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কার্যপত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, স্থায়ী কমিটি সরেজমিন ভিজিট করে ৬২ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল ও উৎপাদন বন্ধের সুপারিশ করে। এসব কোম্পানির কোনো গাইড লাইন অনুসরণ ও জিএমপি কমপ্লাই না করে ওষুধ প্রস্তুত ও চাহিদার মাত্র ৩ শতাংশ উৎপাদন করে। কিন্তু এদের ওষুধ জনগণের কোনো উপকারে আসে না।
তিনি বলেন, বছরের পর বছর কোম্পানিগুলো নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও সরবরাহ করে চলেছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদপ্তরের নজরে আসেনি। স্থায়ী কমিটি বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় নিয়ে তদন্তপূর্বক কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল ও উৎপাদন বন্ধের সুপারিশের পর মন্ত্রণালয়ের আবার কমিটি গঠনের যৌক্তিকতা নেই।
তার বক্তব্যের জবাবে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগ্য জনবল নিয়োগ, ডকুমেন্টশন, নতুন যন্ত্রপতি সংগ্রহ ও সংযোজন ও ব্যাপাক উন্নতি সাধন করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আদালতের নির্দেশে ৯টি প্রতিষ্ঠান ওষুধ বাজারজাত করছে। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
কার্যপত্রে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য সংসদীয় কমিটির অধীনে ৩ নং সাব-কমিটি গঠন করে দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী ১৫১টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আন্তজার্তিক মানসম্পন্ন চিহ্নিত হয় ২২টি কোম্পানি। এছাড়াও ২৬টির অধিকাংশই সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ৪১টিকে মোটামুটি সামঞ্জস্যপূর্ণ যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রণীত গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিস (জিএমপি) সম্পন্ন, যা কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়।
কালোতালিকাভুক্ত ৬২টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইউনিভার্সেল ফার্মা লি., অ্যাবালিশন ফার্মা লি., বেঙ্গল টেকনো ফার্মা লি., বিকল্প ফার্মা লি., ক্রিস্টাল ফার্মা লি., ডলফিন ফার্মা লি., জলপা ফার্মা লি., মাফনাজ ফার্মা লি., ন্যাশনাল ল্যাব লি., কোয়ালিটি ফার্মা লি., রেমিডি ফার্মা লি., সলটন ফার্মা লি., বিস্ট্রল ফার্মা লি., ডিসেন্ট ফার্মা লি., মার্কসম্যান ফার্মা লি., মাইস্ট্রিস ফার্মা লি., প্রিমিয়ার ফার্মা লি., প্রতিতি ফার্মা লি., ইউনিক ফার্মা লি., এক্সিম ফার্মা লি., রিয়ালাইন্স ফার্মা লি., এপিসি ফার্মা লি., আলকদ ফার্মা লি., সেন্ট্রাল ফার্মা লি., দি হোয়েইট হর্স ফার্মা লি., কসমো ফার্মা লি., দেশ ফার্মা লি., গ্লোবেক্স ফার্মা লি., রয়েল ফার্মা লি., ইনোভা ফার্মা লি., স্ট্যান্ডডার্ট ফার্মা লি., ইউনাইটেড ক্যামি ফার্মা লি., অ্যামিকো ফার্মা লি., সিমা ফার্মা লি., স্কাইল্যাব ফার্মা লি., অর্গানিক ফার্মা লি., নর্থ বেঙ্গল ফার্মা লি., এজটেক ফার্মা লি., বেঙ্গল ড্রাগ অ্যান্ড ক্যামি লি., বেনহাম ফার্মা লি., কুমুদিনী ফার্মা লি., মার্স্ক ফার্মা লি., সুনিপুণ ফার্মা লি. এবং রেমো ক্যামিকেলস লিমিটেড।
এছাড়াও সংসদীয় কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতিতে যে ৯টি কোম্পানি ওষুধ বাজারজাত করছে সেগুলো হচ্ছে- মেসার্স ওয়েস্টার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, মেসার্স এফএনএফ ফার্মা লি., মে মর্ডান ফার্মা লি., মে প্রাইম ফার্মা লি., মে সিলকো ফার্মা লি., মে সিনথো ফার্মা লি., মে গ্রিনল্যান্ড ফার্মা লি., মে মিল্লাত ফার্মা লি. ও মে মমতাজ ফার্মা লি.। আর আদালতের নির্দেশে ৯টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে, পারমিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, স্পার্ক ফার্মা লি., শামসুল আলামিন ফার্মা লি., ট্রপিক্যাল ফার্মা লি., ইউনিয়ন ফার্মা লি., রাসা ফার্মা লি., প্যারাডাইস ফার্মা লি., ওসিস ফার্মা লি. এবং ইন্দো বাংলা ফার্মা লি.।